জেলা প্রতিনিধি, কিশোরগঞ্জ: কিশোরগঞ্জ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট কর্তৃক উদ্ভাবিত কেনাফের জনপ্রিয় জাত এইচসি-৯৫ বীজের চাহিদা দিন দিন ব্যাপক হারে বেড়ে চলছে। কিন্তু পর্যাপ্ত পরিমাণ বীজের জোগান না থাকায় চাষিরা পড়েছেন বিপাকে।
গত মঙ্গলবার তারই প্রতিরূপ দেখা যায় পাট গবেষণা আঞ্চলিক কেন্দ্র কিশোরগঞ্জ অফিসে। প্রায় দুই হাজার পাটচাষি সরকারি মূল্যে (প্রতি কেজি ৩০০ টাকা) কেনাফ বীজ নেওয়ার জন্য উপস্থিত হন।
বাজারের বীজের প্রতি আস্থা রাখতে পারছেন না বলে প্রতিনিয়তই চাষিরা বীজের জন্য আসেন। তবে এবার মাত্র ৪০০ চাষিকে এ বীজ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পাট গবেষণা আঞ্চলিক কেন্দ্র কিশোরগঞ্জ কর্তৃপক্ষ।
জানা যায়, গুণগত মানসম্পন্ন কেনাফ বীজ পাওয়ার আশায় চাষিরা পাট গবেষণা কেন্দ্রে হাজির হয়েছিলেন। কিন্তু গবেষণা কেন্দ্রের জায়গা কম থাকায় কৃষকের চাহিদার তুলনায় সামান্য পরিমাণ কেনাফ বীজ জোগান দিতে পারে। বীজ উৎপাদন করে কৃষকদের সরবরাহের জন্য সরকারের আলাদা প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
পাটচাষিরা পাট গবেষণার গুণগত মানসম্পন্ন কেনাফ বীজের চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য জোরালো দাবি জানিয়েছেন। অধিকাংশ কৃষক কেনাফ বীজ না পেয়ে হাতাশা প্রকাশ করেন। কেউ কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করেন। বীজ বিতরণের সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে কিশোরগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ।
পাটচাষি মো. খায়রুল ইসলাম বলেন, আমি করিমগঞ্জ থেকে অনেক সকালে পাট গবেষণা কেন্দ্র কিশোরগঞ্জ অফিসে এসেছি কেনাফ বীজ নেওয়ার জন্য। আমার বীজ লাগে প্রায় ১০ থেকে ১২ কেজি। কিন্তু প্রয়োজনের তুলনায় কম বীজ পেয়েছি। সামনে তিনিও বীজ করবেন বলে জানান।
এ কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. আবুল বাশার বলেন, এইচসি-৯৫ জাতের কেনাফের চাষাবাদপদ্ধতি খুবই সহজ, কৃষক অল্প খরচে অনেক বেশি লাভবান হন এবং এই জাতের আঁশের ফলনও অনেক বেশি।
কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, গবেষণা কেন্দ্র মূলত জাত ও প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করে এবং গবেষণাকাজের অতিরিক্ত বীজটুকুই কৃষকদের জোগান দিতে পারেন। কৃষক যাতে নিজের বীজ নিজে করেন, সে জন্য আগামী বীজ মৌসুমে কেনাফ-চাষিদের মাঝে বীজ সরবরাহের বিষয়ে বিজেআরআইয়ের মহাপরিচালক ড. আ শ ম আনোয়ারুল হক এ কেন্দ্রপ্রধানকে নির্দেশনা দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, কিশোরগঞ্জ জেলায় প্রায় ১০০ থেকে ১৩০ মেট্রিক টন কেনাফ বীজ প্রয়োজন। কিন্তু প্রায় শূন্য দশমিক ৭ মেট্রিক টন কেনাফ বীজ সরকারি মূল্যে কৃষকদের মাঝে সরবরাহ করে পাট গবেষণা আঞ্চলিক কেন্দ্র কিশোরগঞ্জ।